তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি

আপনি কি এমন একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ রসালো ফলের সন্ধান করছেন? যেটা দেখতে খুবই মনোমুগ্ধকর আবার খেতেও অনেক সুস্বাদু ও রসালো! আবার বিভিন্ন ধরনের খাদ্য শক্তি ও পুষ্টিগুণ প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে। আপনার কি জানতে হচ্ছে কি সেই রসালো ফল? তাহলে আপনার চিন্তার আর কোন কারণ নেই। কারণ আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটির মূল আলোচনায় হচ্ছে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি সেই সম্পর্কে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যবহুল ও কার্যকরী আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক!
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি
আমরা অনেকেই হয়তো তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি সম্পর্কে না জেনেই তরমুজ খেয়ে থাকি। তাই আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটির মাধ্যমে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি এ বিষয় সম্পর্কে এমন কিছু ইউনিক ও কার্যকরী তথ্য সম্পর্কে জানাবো, যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই আপনার শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখতে পারবেন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে পারবেন। সাথে সাথে আপনার চেহারা হবে উজ্জ্বল, চোখের দৃষ্টিশক্তি হবে তীক্ষ্ণ, পেট থাকবে পরিষ্কার এবং আরও বিভিন্ন ধরনের উপকার পাবেন। আপনি কি তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুলো জানতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই। এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আশা করি আলোচ্য বিষয়ে বিস্তারিতভাবে নির্ভুল সব তথ্য গুলো জানতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ!
পেজ সূচিপত্রঃ
.

ভুমিকা

পুষ্টিকর রসালো ফল গুলোর মধ্যে তরমুজ হলো মহান আল্লাহ তায়ালার এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। কারণ তরমুজে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন পুষ্টি উপাদান ও অনেক ধরনের গুনাগুন বিদ্যমান রয়েছে। এই পৃথিবীতে অনেক ধরনের গুনাগুন সমৃদ্ধ ফল রয়েছে তার মধ্যে তরমুজ অন্যতম যা শরীরকে ফিট ও সজীব রাখতে সব থেকে বেশি ভূমিকা পালন করে। সাথে সাথে চেহারার কালো ভাব দূর করে উজ্জ্বল করে তোলে, 
দৃষ্টিশক্তিকে অনেক তীক্ষ্ণ করে তোলে, পেটকে বিভিন্ন রোগবালাই থেকে মুক্ত করে এবং রক্ত পরিষ্কার করে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভালো রাখতে সহায়তা করে। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি এই সম্পর্কে। এছাড়াও তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা, তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা, তরমুজের পুষ্টিগুণ, 

তরমুজর খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা, তরমুজ বীজ খাওয়ার উপকারিতা, তরমুজের বীজ খাওয়া কতটা উপকারী? তরমুজের বীজ খাওয়া কিছু ক্ষতিকর দিক, গরমে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা এ বিষয়গুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই আপনি যদি তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই কার্যকরী।

তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি
সাধারণত তরমুজ খুবই আকর্ষণীয়, রসালো, সুস্বাদু এবং সহজলভ্য একটি ফল। তরমুজে নানা ধরনের উপকারী পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। সাধারণত তরমুজ ছোট থেকে বড় প্রায় সকল মানুষরই পছন্দের খাবার, পছন্দের খাবার হলেও তরমুজের রয়েছে কিছু বিশেষ উপকার পাশাপাশি তরমুজে কিছু অপকারও বিদ্যমান রয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে অনেক মানুষই জানেন না। 

প্রিয় পাঠক আপনারা যদি তরমুজের পরিপূর্ণ পুষ্টিগুণ শরীরে পেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনাদের অবশ্যই তরমুজের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানা অনেক জরুরী। কেননা তরমুজ দেখতে আকর্ষণীয় ও রসালো ফল হলেও এতে বিদ্যমান রয়েছে নানা ধরনের সকল পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আবার প্রিয় পাঠক আপনারা যদি তরমুজ পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত খান, তাহলে আপনাদের শরীরে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। 
তাই তরমুজ খাওয়ার আগে প্রত্যেক মানুষেরই তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা আবশ্যক। তাহলে আপনারা যেমন তরমুজের পরিপূর্ণ পুষ্টি শরীরে সাধন করতে পারবেন, ঠিক তেমনি অতিরিক্ত পরিমাণে তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জেনে সতর্ক হতে পারবেন। প্রিয় পাঠক তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক আপনাদের সুবিধার্থে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা

তরমুজের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Citrullus lanatus, গ্রীষ্মকালীন খুবই রসালো সুস্বাদু ফল হচ্ছে তরমুজ। সাধারণত গ্রীষ্মকালে তরমুজ দারুন জনপ্রিয়। এতে প্রচুর পরিমাণে পানি বিদ্যমান থাকে, পানি ৯২% ও শর্করা ৬% এবং আরো অন্যান্য উপাদান ২%। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, আঁশ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি২,ক্যালসিয়াম, আয়রন, খনিজ পদার্থ, ফসফরাস, নিয়াসিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সকল উপকারী উপাদান। ছোট থেকে বড় সকল মানুষের জন্য তরমুজ অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। 

তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি বিদ্যমান থাকায় শরীরে অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য ঠিক থাকে, ক্লান্তি ভাব দূর করে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে তরমুজে খনিজ লবণের উপস্থিতি রয়েছে, যা ত্বক, চুল, দাঁত, নখ ও হাড়ের পুষ্টির জন্য ভীষণ উপকারী। তবে চেষ্টা করতে হবে তরমুজ সব সময় টাটকা খাওয়ার। আর তরমুজ দীর্ঘদিন ফ্রিজে সংরক্ষণ থেকে বিরত থাকুন। তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো।
  • ত্বক পরিষ্কার রাখে পাশাপাশি ব্রণ দূর করেঃ তরমুজের প্রচুর পরিমাণে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান বিদ্যমান রয়েছে, যা ত্বকের ব্যাকটেরিয়া গুলোর সাথে লড়াই করে ত্বকের ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে, যে সকল ব্যাকটেরিয়া গুলোতে ব্রণ তৈরি হয় সেগুলো কমে যায়। ত্বক পরিষ্কার রাখতে তরমুজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ তরমুজে প্রচুর পরিমানে লাইকোপেন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকে,যা ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। মূলত এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অন্যান্য যে কোন ফল বা সবজির চেয়ে তরমুজে বেশি বিদ্যমান থাকে।
  • রক্তচাপ কমায়ঃ তরমুজে সিট্রুলাইন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড বিদ্যমান থাকে যার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়ঃ গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে তরমুজ খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।
  • দেহকে ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করেঃ তরমুজের বিদ্যমান থাকা লাইকোপেন সূর্যের ক্ষতিকারক অতি বেগুনি রশ্মি থেকে আমাদের শরীরকে প্রাকৃতিক সুরক্ষা প্রদান করে থাকেন।
  • পানি শূন্যতা দূর করেঃ সাধারণত শরীরের প্রতিটি কোষের কার্যকলাপ ঠিক রাখার জন্য পানির প্রয়োজন। প্রয়োজনের তুলনায় পানি যদি কম পান করা হয়, সেক্ষেত্রে শরীর ক্লান্ত অনুভূত হয়। আর তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি বিদ্যমান রয়েছে প্রায় ৯২% পানি। তাই আপনারা যদি নিজেদের হাইড্রেট রাখতে চান, সেক্ষেত্রে নিয়মিত তরমুজ খেতে পারেন।
  • চোখ ভালো রাখেঃ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ বিদ্যমান রয়েছে, যা চোখকে সুস্থ রাখতে চোখের নানা ধরনের সমস্যার সারাতে পাশাপাশি চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • আর্থ্রাইটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়ঃ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্রিপ্টোক্সানথিন নামক এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ বিদ্যমান রয়েছে, যা প্রদাহ থেকে শরীরের জয়েন্ট গুলোকে রক্ষা করে। গবেষণা বলছে, তরমুজ সময়ের সাথে সাথে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
  • ত্বক নরম, কোমল, সজীব, লাবণ্যময়ী ও টানটান রাখেঃ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি বিদ্যমান রয়েছে। যা ত্বককে নরম, মসৃণ, কোমল ও লাবণ্যময়ী রাখতে দারুন কাজ করে। যেহেতু তরমুজের প্রচুর পরিমাণে পানি বিদ্যমান রয়েছে, সেহেতু নিয়মিত তরমুজ খেলে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল ও টানটান।
  • তরমুজে ক্ষতিকারক উপাদান যেমন কোলেস্টেরল, চর্বি, সোডিয়াম নেইঃ তরমুজে খুবই সামান্য পরিমাণে ক্যালরি বিদ্যমান রয়েছে। এক কাপ তরমুজে মাত্র ৪৫.৬ ক্যালরি বিদ্যমান রয়েছে। এতে কোন চর্বি নেই, কোলেস্টেরল নেই, আবার কোন সোডিয়ামও নেই। এটি হতে পারে আপনাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার দুর্দান্ত সংযোজন।
  • হজমে সহায়তা করেঃ যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে আপনারা নিয়মিত তরমুজ খেতে পারেন। এতে করে হজমের সমস্যা দূর হবে পাশাপাশি হজম ক্রিয়া আরো উন্নত হবে।
  • তরমুজ ব্যায়ামের জন্য আদর্শ খাবারঃ আপনারা যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের জন্য তরমুজ একটি আদর্শ খাবার হতে পারে। কেননা তরমুজের প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে পানি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যামিনো অ্যাসিড, পটাশিয়াম, ব্যায়ামের পর যদি আপনারা তরমুজ খান, সেক্ষেত্রে আপনাদের এনার্জি দ্রুত ফিরে আসবে। এছাড়াও আপনাদের পেশীর ব্যথা কমাতেও দারুন সহায়ক।
  • হার্টের সমস্যা দূর হবেঃ নিয়মিত তরমুজ খেলে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলকে দূরে রাখা যায়, যা হার্ট সংক্রান্ত সকল রোগ গুলো প্রতিরোধ করতে পারে। হার্টের জন্য খুবই উপকারী তরমুজে উপস্থিত থাকা সেট্রোলিন।
  • রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ প্রচুর পরিমাণে তরমুজের বিদ্যমান রয়েছে আয়রন, যা দেহের রক্তস্বল্পতা দূর করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • হাড় মজবুত করেঃ তরমুজের প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, যা হাড়কে মজবুত রাখতে সহায়তা করে।
  • হৃদযন্ত্র ভালো রাখেঃ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ফাইবার, আঁশ বিদ্যমান রয়েছে, যা হৃদযন্ত্রের নানা ধরনের সমস্যা দূর করে হৃদযন্ত্র ভালো রাখে পাশাপাশি শারীরিক নানা ধরনের সমস্যা দূর করে।
  • রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করেঃ তরমুজে ক্যারোটিনয়েড বিদ্যমান রয়েছে, যা চোখের নানা ধরনের সমস্যা দূরীভূত করে পাশাপাশি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে দারুন সহায়ক।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি করেঃ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে পাশাপাশি ত্বক চুল নখ ভালো রাখতেও সহায়তা করে।
  • হাড়ের ক্ষয় রোধ করেঃ যে সকল মানুষের বয়স জনিত কারণে হাড়ের ক্ষয় হয় তার রোধ করতে তরমুজ তাদের জন্য একটা আদর্শ খাবার। এছাড়াও তরমুজ শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে পাশাপাশি নার্ভাস সিস্টেমকে আরো উন্নত করে।
  • ছেলেদের পোস্ট্রেড ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ তরমুজে লাইকোপিন বিদ্যমান থাকায় তরমুজ লাল রংয়ের হয়। মূলত তরমুজ আন্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর একটি ফল, যা ছেলেদের প্রোস্টেট ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
  • শরীরের নানা ধরনের সমস্যা দূর করেঃ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক বিদ্যমান রয়েছে যা শরীরের নানা ধরনের কাজের সহায়তা করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক রাখেঃ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি বিদ্যমান রয়েছে পাশাপাশিে প্রচুর পরিমাণে আঁশ বিদ্যমান রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
  • হৃদরোগের ঝুকি কমায়ঃ প্রচুর পরিমাণে তরমুজে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বিদ্যমান রয়েছে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
  • দেহকোষ মেমব্রেন গঠন, মাংসপেশী মুভমেন্ট, নার্ভের কার্যকারিতা ও মস্তিষ্ক গঠনে সাহায্য করেঃ তরমুজে কোলিন নামক এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যা দেহকোষের মেমব্রেন গঠন করে, মাংসপেশী মুভমেন্ট করে, নার্ভের কার্যকারিতা ঠিক রাখে, মস্তিষ্কের গঠনে সহায়তা করে ইত্যাদি।

তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা

তরমুজের দারুন একটি বিশেষত্ব হচ্ছে এটি একটি সুস্বাদু ফল,যা ছোট থেকে বড় প্রায় সকল মানুষই খেতে পছন্দ করে। সাধারণত তরমুজে প্রায় ৯২% পানি বিদ্যমান রয়েছে। মূলত তরমুজ একটি ফ্যাট ফ্রি খাদ্য হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, খনিজ পদার্থ সহ আরো বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় সকল উপাদান বিদ্যমান রয়েছে, 
যা শরীরকে তরতাজা এবং শীতল রাখতে সহায়তা করে। আপনারা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে তরমুজ খান, সেক্ষেত্রে কখনোই তরমুজ খাওয়ার ফলে শরীরে সমস্যা দেখা দেবে না। আর যদি আপনারা অতিরিক্ত পরিমাণে তরমুজ খান, সেক্ষেত্রে নানা ধরনের অসুখ পাশাপাশি শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিবে।
  • সাধারণত প্রতি ১০০ গ্রাম তরমুজে প্রায় ১০ গ্রামের মতো শর্করা বিদ্যমান থাকে। যে সকল ব্যক্তিদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের শরীরে মূলত এমনিতেই গ্লুকোজের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। এজন্য যাদের উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস রয়েছে সে সকল ব্যক্তির যদি তরমুজ খাই, সেক্ষেত্রে তাদের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।
  • এছাড়াও তরমুজে প্রচুর পরিমাণে টাইরামাইন নামক অ্যামিনো এসিড বিদ্যমান রয়েছে, যা মাইগ্রেনের ব্যথা সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
  • এছাড়াও অধিক পরিমাণে তরমুজ গ্রহণ করলে সেক্ষেত্রে হজমের নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, পেটের ফোলা ভাব, অম্বল, গ্যাস, বমি, বদহজম ইত্যাদি।
  • কোন ব্যক্তি যদি অ্যালকোহলের সাথে বেশি পরিমাণে তরমুজ খায়, সেক্ষেত্রে তাদের লিভারের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে। তরমুজে বিদ্যমান থাকা লাইকোপেন যখন অ্যালকোহলের সাথে মিশে যায় তখন অতিরিক্ত অক্সাইডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি হয়, যা লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
  • যেহেতু তরমুজে ৯২% পানি বিদ্যমান রয়েছে, সেহেতু বেশি পরিমাণে তরমুজ খেলে শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়। আর যদি অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে রক্তে সোডিয়াম লেভেল কমে যাবে, তখন কিডনিতে সমস্যা দেখা দেবে, পা হাত ফুলে যাবে।
  • সাধারণত তরমুজের প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, কিন্তু আপনারা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে তরমুজ খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে হু হু করে পটাশিয়াম বুদ্ধি পাই, সেক্ষেত্রে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে।
  • সাধারণত তরমুজের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ৭২. সেহেতু যে সকল ব্যক্তি বহুমূত্র রোগী তারা যদি বেশি পরিমাণে তরমুজ খায়, সেক্ষেত্রে তাদের সুগার লেভেল বৃদ্ধি পাবে। তাই জন্য তরমুজ খাওয়ার আগে বহুমূত্র রোগীদের অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে তরমুজ খেতে হবে।
  • আবার কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যাদের তরমুজে এলার্জি রয়েছে, তাদের তরমুজ না খাওয়াই ভালো।

তরমুজের পুষ্টিগুণ

সাধারণত তরমুজ খুবই পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। মূলত তরমুজের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন বি৬, বিটা-ক্যারোটিন, ফাইবার, আঁশ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, আয়রন, খনিজ পদার্থ, ফসফরাস, নিয়াসিন, থায়ামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সহ আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ বিদ্যমান রয়েছে। 
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তরমুজে বিদ্যমান রয়েছে পানি ৯২-৯৫ গ্রাম, ক্যালরি ১৫-১৬ মিলিগ্রাম, আঁশ ০.২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৩.৫ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১২ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৯ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২ মিলিগ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.২ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৩%, ম্যাগনেসিয়াম ২%, পটাশিয়াম ১১২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম, প্রোটিন ০.৬ গ্রাম, সুগার ৬ গ্রাম, ডায়েটারি ফাইবার ০.৪ গ্রাম, লাইকোপেন ৪,৫০০ মাইক্রগ্রাম, ক্যারোটিনয়েড ৫৫ মাইক্রগ্রাম ইত্যাদি।

তরমুজর খাওয়ার নিয়ম

গ্রীষ্মকালীন খুবই সুস্বাদু একটি ফল হচ্ছে তরমুজ। তরমুজ খেতে যেমন সুস্বাদু, ঠিক তেমনি শরীরকে রাখে ঠান্ডা ও তারতাজা। যেহেতু তরমুজ পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি খাবার, সেহেতু প্রত্যেক মানুষের কখন কিভাবে তরমুজ খাবেন সেই সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয় পাঠক আপনারা কখনোই সন্ধ্যার পর কিংবা রাতের বেলা কখনোই তরমুজ খাবেন না। 

কেননা আপনারা যদি রাতের বেলা তরমুজ খান, সেক্ষেত্রে আপনাদের হজম প্রক্রিয়ায় নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে পাশাপাশি পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে। তাই জন্য সন্ধ্যার পর বা রাতের বেলা তরমুজ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সাধারণত ন্যাচারাল সুগার তরমুজে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকে। ফলে রাতের বেলা তরমুজ খেলে বারবার টয়লেট লাগার সম্ভাবনা আছে। 

এতে করে যেমন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে, ঠিক তেমনি কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, পেট ফাঁপা, অম্বল, ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। এজন্য আপনারা অবশ্যই সকাল থেকে বিকেল বেলার মধ্যে তরমুজ খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তরমুজ খাওয়ার আদর্শ সময় হচ্ছে সকাল থেকে বিকালবেলা পর্যন্ত। আপনারা যদি এই সময়ের মধ্যে তরমুজ খান, সেক্ষেত্রে দ্রুত হজম হবে। 

কেননা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত হজম শক্তির হার বেশি থাকে। তরমুজ যেহেতু কোনো ঔষধি ফল নয়, সেজন্য আপনারা তরমুজ সরাসরিও খেতে পারবেন। আবার টুকরো টুকরো করে কেটে সাথে এক চিমটি লবণ এক চিমটি চিনি মিশ করে খেতে পারেন। আবার আপনারা চাইলে দুধের সাথে তরমুজ কুচি কুচি করে দিয়ে তার মধ্যে রোআবজা মিশ করেও মহব্বত শরবত করে খেতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা

সাধারণত গড়কালীন সময়টা হচ্ছে প্রত্যেক নারীর জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। সাধারণত এই সময় প্রত্যেক গর্ভবতী নারীর নিজেদের ডায়েটের দিকে নজর রাখা অত্যন্ত জরুরী। কেননা অস্বাস্থ্যকর ডায়েট মা এবং বাচ্চা দুজনের উপরেই খারাপ প্রভাব ফেলবে। এজন্য গর্ভাবস্থায় খাদ্য তালিকায় অবশ্যই সুষম নানা ধরনের ফল যুক্ত করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় ফলের মধ্যে তরমুজ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। 
মূলত তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম সহ আরো নানা ধরনের উপকারী উপাদান বিদ্যমান রয়েছে, যা গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত রসালো তরমুজ ফলটি ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং তরল দিয়ে পরিপূর্ণ। মূলত এটি গর্ভাবস্থায় শরীরকে হাইড্রেট রাখে। 

এছাড়া তরমুজে লাইকোপিন নামক এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে, যা অসুস্থতা প্রতিরোধ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং প্রদাহের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। মূলত তরমুজ গর্ভবতী নারীদের জন্য একটি আদর্শ এবং স্বাস্থ্যকর খাবার। প্রিয় পাঠক তাহলে চলুন নিচে জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • প্রাতঃকালীন অসুস্থতা দূর করেঃ সাধারণত গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩-৪ মাস প্রায় বেশিরভাগ নারীর বমি ভাব এবং অস্বস্তিতে ভোগেন। ফলে খাবারের প্রতি রুচি থাকে না। এই অস্বস্তিভাব দূর করতে তরমুজ অত্যন্ত উপকারী। গর্ভবতী মায়েরা সকালবেলা হালকা নাস্তা করার পর টুকরো করা তরমুজ বা তরমুজ রস করে খেলে শরীর থাকবে ঠান্ডা ও সতেজ। গর্ভবতী মায়েদের জন্য তরমুজ অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার।
  • ইডিমা বা ফোলাভাব দূর করেঃ প্রায় ম্যাক্সিমাম নারীদের গর্ভকালীন সময়ে হাত, পা ফুলে যায়। এটি মূলত ইডিমা নামে পরিচিত। সাধারণত রক্তহীনতা এবং মূত্রের স্বল্পতার কারণে শরীরে নির্দিষ্ট কিছু টিস্যুতে অস্বাভাবিকভাবে পানি জমা হয় ফলে হাত পা ফুলে যায়। এই হাত-পা ফোলা ভাব দূর করতে আপনারা গর্ভাবস্থায় নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে তরমুজ খেতে পারেন।
  • ডিহাইড্রেশন দূর করেঃ সাধারণত গর্ভকালীন সময়ে অনেক গর্ভবতী মায়েরা ডিহাইড্রেশনে ভোগেন। ডিহাইড্রেশনের ফলে গর্ভাবস্থায় নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে যেমন অলসতা, ক্লান্তি, শারীরিক শক্তির অভাব ইত্যাদি। এছাড়াও তরমুজের প্রচুর পরিমাণে পানি বিদ্যমান রয়েছে প্রায় ৯২%, আপনারা যদি গর্ভকালীন সময়ে ডিহাইড্রেশন দূর করতে চান, সেক্ষেত্রে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে তরমুজ খাবেন।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ সাধারণত গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে শরীরে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেহেতু তরমুজের লাল অংশে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিন নামক এক ধরনের এন্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ বিদ্যমান থাকায় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ সাধারণত বর্তমান সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই সাধারণ একটি বিষয় পাশাপাশি অস্বস্তিকর একটি সমস্যা। সাধারণত গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দেয়। গর্ভবতী নারীদের যেকোনো ধরনের ওষুধ খাওয়ার ব্যাপারে খুবই সচেতন থাকতে হবে। গর্ভবতী মায়েরা আপনারা যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চান, সেক্ষেত্রে নিয়মিত তরমুজ খেতে পারেন। তরমুজে বিদ্যমান থাকা ফাইবার মল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনারা যদি প্রতিদিন নিয়মিত অল্প পরিমাণে তরমুজ খেতে পারেন, সেক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
  • ভ্রুনের হাড় ও দাঁত গঠনে সহায়তা করেঃ তরমুজের প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম বিদ্যমান রয়েছে। গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার ফলে গর্ভে থাকা শিশুর দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে। যা ভ্রুণের বিকাশে দারুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • দেহকে ডিটক্সিক রাখেঃ সাধারণত তরমুজে মূত্রবর্ধক নানা ধরনের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় লিভার ও কিডনিকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে পাশাপাশি ত্বকের এসপিএফ বাড়াতেও দারুন সহায়ক।
  • গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করেঃ সাধারণত গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়েদের দেহে হরমোনের পরিবর্তন হতেই থাকে। আর এই হরমোন গুলোর পরিবর্তনের ফলে গর্ভবতী মায়েরা এসিডিটিতে ভোগেন। খাবারে অরুচি আসে, হজমের সমস্যা দেখা দেয়, এই সকল সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনারা খাবারের পর টুকরো করে তরমুজ খেতে পারেন,আবার তরমুজ জুস করেও খেতে পারেন। এতে করে হজমশক্তি বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি এসিডিটি দূর হবে।

তরমুজ বীজ খাওয়ার উপকারিতা

সাধারণত অনেক ব্যক্তিবর্গ রয়েছে যারা তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। আবার অনেক মানুষ রয়েছে যারা আমাদের কাছে তরমুজ বীজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাই। মূলত তাদের জন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। মূলত তরমুজ খাওয়ার পর তরমুজের বীজ অনেকেই বা বেশিরভাগ মানুষই ফেলে দেয়। তবে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার পর তরমুজের বীজ আর ফেলবেন না। কারণ তরমুজের বীজে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান। তরমুজ বীজ খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • হজম শক্তির উন্নত করেঃ সাধারণত তরমুজের বীজে প্রচুর পরিমাণে আঁশ বিদ্যমান রয়েছে, যা মূলত অপরিশোধিত চর্বি, যা দ্রুত হজমের সহায়তা করে। ফলে পেট সবসময় পরিষ্কার থাকে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ তরমুজের বীজে প্রচুর পরিমাণে জিংক বিদ্যমান রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মূলত সংক্রমণ পাশাপাশি অসমঞ্জস্যতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
  • ত্বক ও চুল ভালো রাখেঃ তরমুজের মাস্ক যেমন ত্বক সুন্দর, সতেজ ও ঠান্ডা রাখে, ঠিক তেমনি তরমুজের বীজ চুল ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
  • দাঁত ও হাড়কে সুস্থ রাখতে সহায়তা করেঃ সাধারণত তরমুজের বীজে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, যা দাঁত ও হাড়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও পেশীর কার্যকারিতা পাশাপাশি স্নায়ু সচল রাখতেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • হৃদ স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ তরমুজের বীজ হচ্ছে ম্যাগনেসিয়ামের দারুণ উৎস। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদ স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

তরমুজের বীজ খাওয়া কতটা উপকারী?

প্রিয় পাঠক আপনারা চাইলে নিয়মিত তরমুজের বীজ খেতে পারেন। কেননা তরমুজের বীজ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। কেননা এটাই বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, প্রোটিন, আঁশ, স্বাস্থ্যকর চর্বির দারুন উৎস। তবে তরমুজের বীজে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি বিদ্যমান রয়েছে। এজন্য অধিক পরিমাণে তরমুজের বীজ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। আপনারা চাইলে প্রতিদিন নিয়মিত ৩০ গ্রাম তরমুজের বীজ খেতে পারেন।

তরমুজের বীজ খাওয়া কিছু ক্ষতিকর দিক

সাধারণত তরমুজের বীজে প্রচুর পরিমাণে আঁশ বিদ্যমান রয়েছে। এজন্য যে সকল ব্যক্তিবর্গের পাকস্থলীতে নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে যেমন হজমের সমস্যা তাদের তরমুজের বীজ না খাওয়াই উত্তম। এছাড়াও তরমুজের বীজে অ্যালার্জিক উপাদান বিদ্যমান রয়েছে, তাই জন্য যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে আপনারা তরমুজের বীজ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 
এছাড়া তরমুজের বীজে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম বিদ্যমান রয়েছে, তাই যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তারা তরমুজের বীজ খেলে খুবই অল্প পরিমাণে খাবেন বেশি পরিমাণে তরমুজের বীজ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। অনেক সচেতন মানুষের তরমুজের বীজ প্রতিদিনের ডায়েটের একটি অংশ। যাদের সমস্যা রয়েছে তারা তরমুজের বীজ খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিবেন। আর যাদের কোনো ধরনের সমস্যা নেই আপনারা নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ তরমুজের বীজ খেতে পারেন।

গরমে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা

গরমে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা
সাধারণত তরমুজ পাঁচ হাজার বছর আগে সর্বপ্রথম মিশরে দেখা গিয়েছিল। তারপর থেকে এই ফলের স্বাদ এবং গুণের জন্য সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যায়। সাধারণত তরমুজে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধির ঝুঁকি কমায়। সাধারণত তরমুজ শরীরে পানির অভাব পূরণ করে পাশাপাশি শরীরে নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের ঘাটতি পূরণ করে। প্রিয় পাঠক তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক গরমে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • হৃদপিন্ডের জন্য উপকারীঃ মূলত তরমুজে সিট্রালিন নামক এক ধরনের অ্যামাইনো এসিড বিদ্যমান রয়েছে। এটি মূলত শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে, স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
  • চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ বিদ্যমান রয়েছে, যা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চোখ ভালো রাখতে প্রতিদিন কয়েক টুকরো তরমুজ খাওয়া উচিত।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে লাইকোপেন বিদ্যমান রয়েছেঃ সাধারণত তরমুজের লাল রংয়ে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপেন বিদ্যমান রয়েছে। এটি মূলত হচ্ছে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। লাইকোপেন মূলত রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
  • শর্করার মাত্রা বজায় রাখেঃ তরমুজের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স হচ্ছে ৭২.যা মূলত এক বাটি কর্নফ্লেক্স এর সমতুল্য। সেই অনুযায়ী তরমুজে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালরি বিদ্যমান রয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে তরমুজের স্বাদ মিষ্টি হলেও গ্লাইসেমিক লোড ৫ এই জন্য রক্তের শর্করার ওপর কোনো রকম ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। তাইতো ডায়াবেটিস রোগীরা খুব সহজেই তরমুজ খেতে পারেন। এছাড়াও তরমুজ গরমে শরীরে পানির ঘাটতি পূরন করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রোদের তীব্রতার প্রভাব কমায়, ত্বক ও চুলের যত্নে, স্বাস্থ্যকর হার্ট পেতে তরমুজ অত্যন্ত উপকারী একটি ফল।

লেখকের ইতি কথাঃ তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি

সম্মানিত পাঠক আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি সেই সম্পর্কে পুরোপুরি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ভালোভাবে পড়ে নিলে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ, তরমুজ কেন খাওয়া উচিত? তরমুজে কি কি ভিটামিন আছে? সে সম্পর্কে খুব সহজেই জানতে পারবেন। তরমুজ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গ কে বিশেষভাবে দেখভাল করে সুস্থ ও ফিট রাখার মহা ঔষধ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। 

নিয়মিত সাধ্যমত তরমুজ খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগ-বালা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকেই তরমুজের ভিতরে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও প্রোটিন এই গুনাগুন গুলো সম্পর্কে জানেনা। তাই অনেকেই তরমুজ তেমন খায় না। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই আপনি যদি সব ধরনের রোগ-বালা থেকে মুক্ত থাকতে চান এবং আপনার শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে চান তাহলে অবশ্যই তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি এই আর্টিকেলটি পড়া আবশ্যক।

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগের সাথে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের তথ্যবহুল আর্টিকেল নিয়মিত পোস্ট করে থাকি। তাই আপনি যদি এ ধরনের আরও তথ্যবহুল উপকারী পোষ্ট করতে চান, তাহলে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। সাথে সাথে এই আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে আপনার নিকট আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজনদের কাছে তাদের উপকারার্থে শেয়ার করে দিন। 

যেন তারা তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি এ বিষয় সম্পর্কে পুরোপুরি ভালোভাবে জেনে নিতে পারে। তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ২৪টি ও অপকারিতা ৯টি এ বিষয়টি নিয়ে আপনার যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ মতামত বা প্রশ্ন থাকে, তাহলে অবশ্যই নিচে দেওয়া মতামত বক্সে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আবার আপনাদের সাথে কথা হবে নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ ও সুস্থ থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কনফিডেন্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url