চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস

বর্তমান সময়ে প্রতিটি ছেলে-মেয়েরাই তাদের চুলের যত্ন নিয়ে চিন্তিত থাকেন। প্রতিটি ছেলে-মেয়েই চাই যে তাদের চুল সবসময় স্বাস্থ্য উজ্জ্বল, ঝলমলে, সিল্কি লম্বা ও কালো হয়ে থাকুক। চুলের যত্ন নিয়ে বর্তমান সময়ে প্রত্যেকেই চিন্তিত থাকে? কিন্ত আপনার চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটির মূল আলোচনায় হচ্ছে চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস সম্পর্কে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যবহুল ও কার্যকরী আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক!
চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস
আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটির মাধ্যমে চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস সম্পর্কে এমন কিছু ইউনিক ও কার্যকরী তথ্য সম্পর্কে জানাবো, যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই আপনার চুলকে সবসময় স্বাস্থ্য উজ্জ্বল, ঝলমলে, সিল্কি লম্বা ও কালো এবং সুন্দর রাখতে সক্ষম হবেন। অনেক ছেলে-মেয়েরাই হয়তো জানেন না যে, কিছু কার্যকরী উপায় অবলম্বন করলে নিমিষেই চুলকে স্বাস্থ্যউজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে রাখা সম্ভব। তাই আপনি যদি চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুলো জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেল শুধুমাত্র আপনার জন্যই। এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আশা করি আলোচ্য বিষয়ে বিস্তারিতভাবে নির্ভুল সব তথ্যগুলো জানতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ!
পেজ সূচিপত্রঃ
.

ভুমিকা

বর্তমান সময়ে আধুনিকতার স্পর্শে এসেও বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ মানুষ তাদের চুলের স্বাস্থ্য-সুরক্ষা নিয়ে খুব সচেতন থাকেতে চান। এজন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবার বই পড়ে থাকেন ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে সস্তার জল ও প্রাণবন্ত করার চেষ্টা করে থাকেন। তাই আজকের এই আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস সম্পর্কে। তাই এ বিষয়টি আপনি যদি সম্পূর্ণ ভালোভাবে জেনে নেন তাহলে খুব সহজেই চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস গুলো এপ্লাই করে তারা নিজেদের চুলকে সুন্দর, আকর্ষণীয়, নজর কাড়া সুশ্রী ও প্রাণবন্ত করে তুলতে পারবে। 
এছাড়াও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস, চুল লম্বা করতে চান? - কোন তেল মাখলে চুল বড় হবে? ছেলেদের চুলের যত্ন কিভাবে নিতে হয়? মেয়েদের চুল ভালো রাখার ৫টি ঘরোয়া উপায়, চুলের জন্য কোন কোন ভিটামিন দরকার? এই বিষয়গুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস পেতে এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই কার্যকরী।

চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস

চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস
সাধারণত একজন নারীর সৌন্দর্যের অংশ হচ্ছে চুল। আর তাই জন্যই চুলকে সুন্দর, ঝলমলে, ঘন, কালো ও মজবুত রাখতে নিয়মিত চুলের পরিচর্যা বা যত্ন করা আবশ্যক। প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • ১.প্রিয় পাঠক গোসলের আগে অবশ্যই ভালোভাবে চুল আঁচড়িয়ে নিবেন এবং খেয়াল রাখবেন চুল আঁচড়ানোর সময় সব সময় নিচ দিক থেকে চুলা আঁচড়াবেন। এতে করে আপনার চুলে যদি কোন রকম জট থাকে, তাহলে খুব সহজে খুলে যাবে। আপনার চুল খুবই কম নষ্ট হবে। চুল আঁচড়ানোর ক্ষেত্রে সব সময় মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করবেন। এতে করে চুলের জট তাড়াতাড়ি খুলবে চুল কম উঠবে।
  • ২.প্রিয় পাঠক শ্যাম্পুতে যেহেতু বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল মেশানো থাকেন, এইজন্য সপ্তাহে ২/৩ দিন শ্যাম্পু করবেন। কেননা আপনি যদি চুলে বেশি শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে আপনার চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যাবে, তখন আপনার চুল দেখাবে শুষ্ক। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • ৩.অনেকেই গোসলের শেষে চুলে গামছা অথবা টাওয়াল দিয়ে শক্ত করে চুল বেঁধে রাখেন, তবে এটা চুলের জন্য মারাত্মক ভুল। প্রিয় পাঠক আপনারা গোসল শেষে গামছা অথবা টাওয়াল দিয়ে শক্ত করে চুল বেঁধে রাখবেন না। আবার অনেকেই রয়েছে টাওয়াল অথবা গামছা দিয়ে চুল ঝাড়ে এটা করা একেবারেই উচিত নয়, এতে করে চুলের আগা ফেটে যাবে।
  • ৪.অনেকেই রয়েছে গোসলের পরপরই ভেজা চুল আঁচড়ায়। গোসলের পরপরই ভেজে চুল আচড়ানো থেকে বিরত থাকুন। নইলে নরম হয়ে যাবে আপনার চুলের গোঁড়া।
  • ৫.অনেকেই রয়েছে যারা মনে করে চুলে বেশি পরিমাণে তেল দিলেই চুল বেশি পুষ্টি পাবে, চুল তাড়াতাড়ি বড় হবে, তবে এটা নিতান্তই একটিভুল ধারণা। চুলে কখনোই অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করবেন না। সব সময় চুলে অল্প পরিমাণে তেল ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন পাশাপাশি তেল ব্যবহার করার পর হালকা করে চুলের গোঁড়া ম্যাসাজ করবেন। এতে করে চুলের গোড়া মজবুত হবে। চুল পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি শোষণ করতে পারবে।
  • ৬.রাতের বেলা অনেকেই চুল এলোমেলো করে কিংবা চুল ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তবে এটা মোটেও ঠিক কাজ না। রাতে শোবার আগে অবশ্যই সুন্দর করে চুল আঁচড়িয়ে বেনি করে ঘুমাবেন। এতে করে চুল ভালো থাকবে।
  • ৭.প্রিয় পাঠক আপনাদের যাদের চুল পড়ার সমস্যা রয়েছে, আপনারা চাইলে নারিকেল তেলের সাথে দারুচিনিক গুঁড়া ভালোভাবে মিশিয়ে চুলের গোঁড়ায় ব্যবহার করে হালকা মাসাজ করলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। এটি আপনারা সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন।
  • ৮.এছাড়াও আপনারা চাইলে আপনাদের পছন্দমতো সপ্তাহে তিনবার চুলে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করবেন। এতে করে আপনার চুল আরো ঘন কালো মজবুত ঝলমলে হয়ে উঠবে।
  • ৯.প্রিয় পাঠক আপনারা যখন চুলের শ্যাম্পু করবেন, তখন শ্যাম্পু করার পর একমগ পানির মধ্যে লেবু অথবা চায়ের লিকার দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে নিলে আপনার চুল অনেক সিল্কি হয়ে যাবে।
  • ১০. প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি চুল পড়ার সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে আপনারা গোসলের পর এক মগ পানিতে ৭/৮টি পেয়ারা পাতা ভালোভাবে সিদ্ধ করার পর সেই পানি দিয়ে চুল ধুলে চুল পড়া অনেকাংশেই কমে যাবে।
  • ১১. সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার আপনার চিরুনি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেবেন। এছাড়াও প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাবেন। এতে করে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
  • ১২.প্রিয় পাঠক আপনারা আপনাদের চুলে ব্যবহৃত নারকেল তেলের মধ্যে আমলকি, জবা ফুল, কালোজিরা, মেথি, চুলায় ভালোভাবে ফুটিয়ে কাচের বোতলে ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। আপনি যেদিন যেদিন শ্যাম্পু করবেন তার আগে ভালোভাবে তেল আপনার চুলের গোঁড়ায় মাসাজ করুন। এতে করে অনেক উপকার পাবেন।
  • ১৩. চুল পড়া চিরতরে দূর করতে পেঁয়াজের রস ১০ মিনিট চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে নিন। আপনারা যদি পেঁয়াজের রস নিয়মিত চুলের গোড়ায় ব্যবহার করেন, তাহলে চুল পড়া বন্ধ হবে, নতুন চুল গজাবে, চুলের খুশকি দূর হবে।
  • ১৪.মাথার যে জায়গাগুলোতে চুল কমে গেছে সেই জায়গা গুলোতে আপনারা যদি মধু ও দারুচিনির গুঁড়ো ভালোভাবে মিশিয়ে চুল কমে যাওয়া জায়গা গুলোতে লাগান, তবে সেই জায়গা গুলোতে নতুন চুল গজাবে।
  • ১৫.প্রিয় পাঠক আপনারা যখন রোদে বের হবেন, তখন অবশ্যই চুল ঢেকে বের হবেন অথবা ছাতা ব্যবহার করবেন।
  • ১৬.অনেকে রয়েছে চুলে তেল ব্যবহার করতে চাই না, তবে চুলের জন্য তেল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই জন্য সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দুই থেকে তিন দিন মাথায় তেল ব্যবহার করুন।
  • ১৭. সব সময় শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন। চুল যেন রুক্ষ না হয়, এজন্য সব সময় ভেষজ বা মাইন্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন।
  • ১৮.প্রিয় পাঠক আপনাদের যাদের চুল ভেঙে গেছে কিংবা রুক্ষ হয়ে গেছে, আপনারা চুলের যত্নে টক দই, ডিম, মধু, মেহেদী পাতা, জবা ফুল, এলোভেরা একসাথে ভালোভাবে মিক্স করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে অনেক উপকার পাবেন।
  • ১৯. প্রিয় পাঠক আপনারা যদি একমুট মেথি সারারাত এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে রেখে দেন এবং সকালবেলা ভালোভাবে বেটে চুলে লাগান, তাহলে আপনাদের চুল অনেক সিল্কি হবে। চুল থেকে রুক্ষ ভাব চলে যাবে।
  • ২০. যখন যখন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন শ্যাম্পু ব্যবহারের পর অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার ও ব্যবহার করতে পারেন যেমন লেবুর রস, চায়ের লাইকার, ভিনেগার ইত্যাদি।
  • ২১.সাধারণত চুল ভেজা অবস্থায় সব থেকে ভঙ্গুল অবস্থায় থাকে। চুল ভেজা অবস্থায় গোড়া থেকে ভেঙে যাওয়া খুবই সহজ। এজন্য আপনারা শ্যাম্পু করার সময় কিংবা গোসলের সময় চুলে বেশি চাপ প্রয়োগ করবেন না।
  • ২২. সঠিকভাবে চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন সাধারণত বাইরে বেরোলে চুলে বিভিন্ন ধরনের ধুলোবালি আটকে যায়। তাই চুল পরিষ্কার করার জন্য চুলের ধরন বুঝে ভালো মানের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। যখন শ্যাম্পু করবেন তখন ভালোভাবে পুরো মাথা আস্তে আস্তে মাসাজ করবেন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন।
  • ২৩.চুলে সব সময় একরকম হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন। এতে করে কোন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই আপনার চুলের যত্ন ভালোভাবে করতে পারবেন।
  • ২৪. চুলে হিট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা চুলে তাপ প্রয়োগ চুলকে ভেঙে দেয়। আবার কখনো কখনো অতিরিক্ত হিট দেওয়ার ফলে চুল জ্বলে যেতে পারে। তাই জন্য আয়রন অথবা চুল স্ট্রেটনার যদি আপনারা ব্যবহার করেন, তবে সাবধানতা অবলম্বন করে ব্যবহার করবেন।
  • ২৫.প্রিয় পাঠক আপনার চুলে কখনোই অতিরিক্ত হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না। অতিরিক্ত হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের বৃদ্ধি ও সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • ২৬. প্রিয় পাঠক আপনি আপনার চুলের ধরন বুঝে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন অথবা তিন থেকে চার দিন হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন।
  • ২৭. সব সময় ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করবেন। আপনারা যদি চুলে গরম পানি ব্যবহার করেন, এতে করে আপনার সুন্দর চুলগুলো ঝরে পড়ে যেতে পারে। তাই চুলের ড্যামেজ থেকে চুলকে রক্ষা করতে চুলে সব সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন।
  • ২৮. চুলে টিজিং ব্যবহার পরিহার করুন। কেননা টিজিং করে চুলের আয়তন বৃদ্ধি করা গেলেও এটি চুলের স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভালো নয়। তাই এটি পরিহার করায় সবচেয়ে উত্তম।
  • ২৯. ঘুমাতে যাওয়ার আগে কখনোই শক্ত করে বেনি করবেন না হালকা করে বেনি করুন। এতে করে চুল ভালো থাকবে।
  • ৩০.চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত ডিম, বাদাম, পালংশাক, মিষ্টি আলু, লেবু, ডাল ইত্যাদি খান। এতে করে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। ডিমে প্রোটিন, জিংক, সেলেনিয়াম, সালফার, আয়রন বিদ্যমান রয়েছে। যা চুলের গোড়া শক্ত করার পাশাপাশি চুলের গোড়ায় অক্সিজেন সরবরাহ করে। বিভিন্ন ধরনের বাদামে প্রচুর পরিমাণে বায়োটিন বিদ্যমান রয়েছে। যা চুল বৃদ্ধি করে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়তা করে। পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ফোলাইট ও আয়রন বিদ্যমান রয়েছে। যা চুলের ফলিকলে অক্সিজেন পৌঁছায়। মিষ্টি আলুতে বিদ্যমান ভিটামিন মাথার ত্বকে প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক তেল তৈরি করে। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি বিদ্যমান রয়েছে, যা চুল গজাতে দারুন কার্যকরী।

চুল লম্বা করতে চান? - কোন তেল মাখলে চুল বড় হবে?

সাধারণত বর্তমান সময়ে দূষণ কিংবা আদ্রতা আমাদের চুলকে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন এবং আমাদের চুলের বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। বর্তমান সময়ে প্রতিদিনের কাজের চাপের কারণে চুলের আলাদাভাবে আমরা কোন যত্ন নিতে পারি না। কিন্তু শুধুমাত্র আমরা যদি এই ৪ ধরনের তেল চুলে নিয়মিত মাসাজ করি, তাহলে আমাদের চুল হবে স্বাস্থ্যকর, চকচকে, ঝলমলে এবং মজবুত। 
শরীরে যেমন পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টির প্রয়োজন, ঠিক তেমনি চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টির প্রয়োজন। আর চুলের পুষ্টি যোগাতে আপনাকে একমাত্র সাহায্য করতে পারে কিছু তেল। প্রিয় পাঠক তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক চুল লম্বা করতে কোন তেলগুলো ব্যবহার করবেন সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • আমন্ড অয়েলঃ প্রিয় পাঠক আপনারা যদি প্রতিদিন নিয়মিত চুলে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে আপনাদের চুল পড়া অনেকাংশে কমে যাবে এবং আপনাদের চুল ঘন ও লম্বা হবে। এই তেল মাথার ত্বকে চুলকানি, খুশকির সমস্যা, লাল স্ক্যাল্প ইত্যাদি সমস্যা গুলো দূর করতে সহায়তা করবে এবং চুলকে করবে স্বাস্থ্যকর। প্রিয় পাঠক আপনার যদি নিয়মিত সপ্তাহে তিন দিন আমন্ড অয়েল ব্যবহার করেন, এতে করে প্রদাহ কমবে পাশাপাশি মাথার ত্বক থাকবে ঠান্ডা। প্রিয় পাঠক আপনারা যদি নিয়মিত এই তেল ব্যবহার করেন, তবে আপনাদের চুল হবে লম্বা, ঘন, সিল্কি হবে। এই তেলের ভালো ফলাফল পেতে চাইলে নিয়মিত এই তেল মাথায় ব্যবহার করুন।
  • ক্যাস্টর অয়েলঃ ক্যাস্টর অয়েলের প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং রিসিনোলিক বিদ্যমান রয়েছে, যা সঞ্চালন বর্ধক বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ। ক্যাস্টর অয়েলের বিদ্যমান থাকা রিসিনোলিক অ্যাসিড আমাদের চুলের গোড়ার ফলিকলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে, যা চুলের দ্রুত বৃদ্ধি করে। এছাড়াও এটি চুলে প্রাকৃতিক তেল তৈরিতে সহায়তা করে পাশাপাশি চুলের আদ্রতা বজায় রাখে। ক্যাস্টর অয়েল আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রিয় পাঠক আপনারা যদি ক্যাস্টর অয়েল নিয়মিত চুলে ব্যবহার করেন, তাহলে অনেক উপকার পাবেন।
  • আর্গান অয়েলঃ চুলের বৃদ্ধিতে সেরা তেলগুলোর মধ্যে আর্গান অয়েল একটি। চুলের সকল সমস্যা দূর করার জন্য সেরা প্রাকৃতিক সলিউশন হচ্ছে আর্গান অয়েল। এই তেলটি যারা যারা ব্যবহার করে তারা জানে কতটা ভালো। প্রিয় পাঠক আপনারা চাইলে এই তেলটি আপনাদের মাথায় নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনাদের চুল হবে স্বাস্থ্যকর, ঘন, কালো, লম্বা, সিল্কি, ঝলমলে। এই তেলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই বিদ্যমান রয়েছে। যা চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি যোগাতে সহায়তা করে। চুলকে ঘন করে এবং শুষ্ক চুলকে ঝলমলে করে। প্রিয় পাঠক আপনারা যদি এই তেলটি সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করেন, তাহলে আপনারা নিজেই উপকার দেখতে পাবেন।
  • অনিয়ন অয়েলঃ বর্তমান সময়ে চুলের সমস্যার সমাধানে অনিয়ন অয়েল অত্যন্ত উপকারী। এই তেলে চুল পড়া রোধ করে, চুল মজবুত করে, চুল ঘন ও লম্বা করে, প্রিয় পাঠক আপনি যদি লম্বা চুল পেতে চান, সেক্ষেত্রে এই তেলটি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন। এই তেলে প্রচুর পরিমাণে সালফার বিদ্যমান রয়েছে, যা চুলের ফলিকলকে রক্ষা করে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।

ছেলেদের চুলের যত্ন কিভাবে নিতে হয়?

বর্তমান সময়ে প্রায় ম্যাক্সিমাম পুরুষ চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে গরম কালে অতিরিক্ত গরম আদ্রতা এবং ঘামের কারণে এই সমস্যা টা সকল পুরুষের বৃদ্ধি পায়। যে সকল পুরুষ মানুষের মাথার ত্বক খুবই তৈলাক্ত তারা যদি এই সমস্যা এড়াতে চান, তাহলে আপনাদের কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি আপনার চুল সুন্দর স্বাস্থ্যজ্জ্বল রাখতে চান, সেক্ষেত্রে চুলের ধরন অনুযায়ী আপনাকে চুলের যত্ন করতে হবে যেমন তৈলাক্ত এবং শুষ্ক চুলের জন্য নানা ধরনের যত্নের প্রয়োজন। 
তৈলাক্ত চুলের জন্য আপনাদের চুলে নিয়মিত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন পাশাপাশি চুলের সাথে মানানসই কন্ডিশনার অবশ্যই ব্যবহার করবেন। নিয়মিত চুলে তেল ব্যবহার করবেন, তবে মাথায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন। প্রিয় পাঠক শুষ্ক চুলের জন্য আপনারা সপ্তাহে ৩/৪ বার শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার চুলের আদ্রতা বজায় থাকবে পাশাপাশি শ্যাম্পুর সাথে মানানসই কন্ডিশনার অবশ্যই ব্যবহার করবেন। 

আপনার চুলের আদ্রতা বজায় থাকবে এরকম শ্যাম্পু অন্ততপক্ষে সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন। এছাড়াও ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি এরকম চুলের মাস্কও করতে পারেন। এছাড়াও আপনার চুলের জন্য কোন তেলটি সবচেয়ে ভালো এবং উপযুক্ত সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এবং নিয়মিত সেই তেলটি আপনার মাথায় ব্যবহার করুন অনেক উপকার পাবেন। 

প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি চুল পড়ার সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে আপনারা ঘরোয়া টোটকা হিসেবে চুলে নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখবেন আপনার স্ক্যাল্প যেন বেশি শুষ্ক না হয়, নয়তো চুল পড়া বেড়ে যাবে। আপনার চুল অনুযায়ী ভালো মানের চিরুনি ব্যবহার করুন। এতে করে চুলের রুক্ষ ভাব দূর হবে। আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী সপ্তাহে ৩/৪ বার অবশ্যই চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন এবং চুলের সাথে মানানসই কন্ডিশনার অবশ্যই ব্যবহার করবেন। 

সবসময় শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রে কম ক্ষার যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। কেননা আপনি যদি বেশি ক্ষার যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে শ্যাম্পু আপনার চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে ফেলবে। তাই সবসময় শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রে মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। মাথায় সব সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহারের চেষ্টা করবেন। ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধোয়ার চেষ্টা করবেন ঠান্ডা পানি চুলের রোমকূপ সংকুচিত করে এবং চুল ভালো রাখে। 
যখন আপনাদের চুল ভেজা অবস্থায় থাকবে তখন অবশ্যই চুলা আঁচড়ানোর ক্ষেত্রে মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। আপনার চুলকে অতিরিক্ত তাপ থেকে রক্ষা করুন যেমন ট্রেটনার, হেয়ার ডায়ার এই পদ্ধতি গুলো চুলকে ভঙ্গুল করে। তাই যতটা সম্ভব এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন যেমন ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার আপনার চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করবে। 

প্রতিদিন নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। কেননা পানি কম খেলে চুল রুক্ষ ও ভঙ্গুল হয়ে যায়। এজন্য প্রত্যেক মানুষের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত। ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন। একেবারে করা সম্ভব নাহলে আপনারা চাইলে আস্তে আস্তে ধূমপান মদ্যপান ত্যাগ করতে পারেন। আর যদি একেবারেই সম্ভব না হয় তবে ধূমপান ও মদ্যপান নিয়ন্ত্রণে রাখুন। 

প্রত্যেকটা ছেলেদেরই চুল যেমন খুবই সেনসিটিভ একটি জিনিস এজন্য অনেক মানুষের পর্যাপ্ত পরিমাণে চুলের যত্ন নেওয়া উচিত যেমন ধরুন অতিরিক্ত চুল পরিষ্কার না করা, চুল আলতো করে শুকিয়ে নেওয়া, হেয়ার ক্রিম বা জেলের বদলে এলোভেরা জেল ব্যবহার করা, গরমে স্ক্যাল্প ঠান্ডা রাখতে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন চুলে তেল ব্যবহার করা, চুল পড়লে পেঁয়াজের রস ব্যবহার করা, 

খুশকি সমাধান করতে টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করা। কেননা এটি একটি বৈজ্ঞানিক প্রমাণিত তেল এতে এন্ট্রি-মাইক্রোবিয়াল ও এন্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদানে ভরপুর, যা খুশকি প্রতিরোধে দারুন উপকারি। এটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলে খুশকি চিরতরে দূর হয়ে যাবে। চুলের যত্নে আপনারা ডিম ব্যবহার করতে পারেন। এটি চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী এতে রয়েছে সালফার ও প্রোটিন যার চুলের ফলিকল শক্ত ও মজবুত করে, 

চুল গজাতে সহায়তা করে, চুল ঝলমলে ও নরম করে। চুল শক্ত করে না বেঁধে নরম করে বাঁধা বা ক্যাপ না পরা চুল সুন্দর রাখতে ৪/৫ সপ্তাহ পরপর ট্রিম করা। চুলের সুস্থতায় ডায়েট অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ যেমন মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, শাকসবজি, বিভিন্ন ধরনের বাদাম এই পুষ্টিকর খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে বিরত থাকা এবং প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে আট ঘন্টা ঘুমানো। 
ছেলেদের চুল ভালো রাখার উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চুল নিয়মিত পরিষ্কার করা, গরম পানি এড়িয়ে চলা, হালকা কন্ডিশনার ব্যবহার করা, মাথার ত্বক কম স্পর্শ করা, স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলা, স্টাইলিং পণ্য অতিরিক্ত ব্যবহার না করা, চুল অতিরিক্ত পরিষ্কার না করা ইত্যাদি। প্রিয় পাঠক উপরোক্ত উপায় গুলো যদি আপনারা মেনে চলতে পারেন, তাহলে আপনাদের চুল স্বাস্থ্যকর সুন্দর ঝলমলে থাকবে। প্রিয় পাঠক আশা করি আপনারা ছেলেদের চুল ভালো রাখার উপায় গুলো ভালোভাবে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন ধন্যবাদ।

মেয়েদের চুল ভালো রাখার ৬টি ঘরোয়া উপায়

নারীর সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে তার চুল। মেয়েদের সৌন্দর্য অনেকাংশে বাড়িয়ে তোলে তাদের ঘন কালো লম্বা চুল। প্রিয় পাঠক আপনি যদি একজন মেয়ে হয়ে থাকেন তাহলে আপনার অবশ্যই আপনার চুলগুলো সুন্দর ঝলমলে ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য চুলের যত্ন করা উচিত। আপনারা যদি এই ঘরোয়া উপায় গুলো চুলে প্রয়োগ করেন তাহলে আপনাদের চুল হবে আরো স্বাস্থ্যকর ঘন লম্বা কালো ও ঝলমলে। 

কি নাম চাই ঝলমলে চুল পেতে সকলেই চাই আর এই জন্য আপনাদের ঝলমলে চুল পেতে চুলের যত্ন নিতে হবে তাহলে আপনার চুল স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে। সাধারণত বর্তমান সময়ে প্রায় প্রত্যেক মানুষেরই চুলের কম বেশি সমস্যা রয়েছে। আর এই সমস্যাগুলো দূর করতে আপনাদের আজকে চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনারা যদি প্রতিদিন নিয়মিত চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক ইউজ করেন, 

সেক্ষেত্রে আপনাদের চুলের বৃদ্ধি হবে এবং নতুন চুল গজাবে, চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি আপনার চুল হবে উজ্জ্বল ও ঝলমলে। সাধারণত একটি মানুষের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে চুলের জন্য। আর এই চুলকে ভালো রাখতে আপনারা নিয়মিত বাদাম তেল, জলপাইয়ের তেল, নারিকেল তেল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হেয়ার প্যাক তৈরি না করে আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চুলের যত্ন করতে পারেন। এতে করে আপনাদের কোন রকম চুলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। 
আপনাদের চুলের সৌন্দর্য বজায় থাকবে। প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদের এই আর্টিকেলে চুলের যত্নে A to Z বিস্তারিত আলোচনা করব। চুল সুন্দর ও ঝলমলে রাখতে চুলের যত্নে আপনারা ঘরোয়া কিছু কার্যকরী হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে কিছু সহজ ও প্রাকৃতিক হেয়ার প্যাক শেয়ার করা হলো। যা আপনাদের চুলের গোড়া মজবুত করবে, চুল মসৃণ করবে, চুল ঘন করবে এবং চুল ঝলমলে করতে সহায়তা করবে।
  • ডিম ও মধুর হেয়ার প্যাকঃ আপনারা প্রথমে রুম টেম্পারেচারে থাকা একটি ডিম এবং দুই টেবিল চামচ মধু নিবেন। এই দুইটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে আলতোভাবে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাকটি দেওয়ার ফলে আপনার চুল পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন পাবে পাশাপাশি মধু আপনার চুলকে করবে নরম ও মসৃণ।
  • দই ও মেহেদীর হেয়ার প্যাকঃ আপনারা প্রথমে এক টেবিল চামচ মেহেদী গুড়া নিবেন সাথে ১/২ কাপ দই। মেহেদী গুড়া এবং দই খুবই ভালোভাবে মিশিয়ে সমস্ত চুলে লাগাবেন। এরপর আধা ঘন্টা অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে আপনার চুল ওয়াশ করে নিন। মেহেদী আপনার চুলের জন্য কন্ডিশনার এর কাজ করবে ও আপনার চুলের আদ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে দই।
  • নারিকেল তেল ও অ্যালোভেরা হেয়ার প্যাকঃ আপনারা প্রথমে ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেল নিবেন সাথে দুই টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল। নারিকেল তেল ও অ্যালোভেরা জেল খুবই ভালোভাবে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় এবং চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করুন। এরপর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে আপনার পুরো চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এতে আপনার চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং চুল ঝলমলে দেখাবে।
  • কলা ও মধুর হেয়ার প্যাকঃ প্রথমে একটি পাকা কলা ভালোভাবে চটকে নিন বা মিক্স করে নিন। এরপর সাথে এক টেবিল চামচ মধু এড করুন। ভালোভাবে কলার মিশ্রণ এবং মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার চুলে ভালোভাবে লাগান। এই প্যাকটি চুলে লাগানোর পর ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। কলা আপনার চুলের আদ্রতা ঠিক রাখবে এবং মধু চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এনে দেবে।
  • মেথি ও দই এর হেয়ার প্যাকঃ প্রথমে আপনারা আগের দিন রাতে ২ টেবিল চামচ মেথি এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এরপর সকাল বেলা দেখবেন মেথিগুলো ফুলে উঠেছে। মেথি সাথে ১/২ কাপ দই ভালোভাবে পেস্ট করে আপনার পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। তারপর ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট পর আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন। মেথি আপনার চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে পাশাপাশি চুল ঝরে পড়া কমাবে।
  • প্রিয় পাঠক চুলের যত্নে উপরের হেয়ার প্যাক গুলো আপনারা সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আপনারা আপনাদের চুলের সমস্যা ও ধরন অনুযায়ী উপাদান গুলো পরিবর্তন করতে পারেন কোন সমস্যা নেই। আপনারা যদি উপরের হেয়ার প্যাক গুলো রেগুলার ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে আপনাদের চুল প্রাকৃতিকভাবে মজবুত ও সুন্দর হবে পাশাপাশি প্রাকৃতিকভাবে চুল ঘন ও লম্বা হবে।

চুলের জন্য কোন কোন ভিটামিন দরকার?

চুলের জন্য কোন কোন ভিটামিন দরকার?
চুলের জন্য ভিটামিন এ, সি, ডি, ই এবং বি ভিটামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এই ভিটামিন গুলো চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে পাশাপাশি মাথার ত্বকের সুস্থতায় সহায়তা করে। এছাড়াও চুলের জন্য যে সকল উপাদান অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো হলো প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক, সহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান চুলের জন্য অপরিহার্য। প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে চলুন নিচে জেনে নেয়া যাক চুলের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং তাদের উৎস নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
  • ভিটামিন এঃ সাধারণত ভিটামিন এ চুলের ফলিকলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান। এটি যেমন চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, ঠিক তেমনি মাথার ত্বক শুষ্ক হওয়া থেকে প্রটেক্ট করে। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার গুলো হলো যেমন পালংশাক, মিষ্টি আলু, গাজর, দুধ, ডিম, দুগ্ধ জাতীয় খাবার ইত্যাদি।
  • ভিটামিন সিঃ চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন সি। এটি মূলত মাথার ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে দারুন সহায়ক, যা চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে যেমন স্ট্রবেরি, লেবু, পেয়ারা, কমলা ইত্যাদি।
  • ভিটামিন ডিঃ সাধারণত ভিটামিন ডি চুলের ফলিকল বজায় রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য ভিটামিন ডি চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। এটি যেমন চুল পড়া কমায়, ঠিক তেমনি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। কারো যদি ভিটামিন ডি এর অভাব হয়, সেক্ষেত্রে তাদের চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং তাদের চুল পড়া শুরু হবে। এজন্য প্রত্যেকেরই শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব যেন না হয়, সেজন্য ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া আবশ্যক। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে দুগ্ধজাত খাবার, মাছ, ডিমের কুসুম ইত্যাদিতে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। তবে আপনারা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি পেতে চান, সেক্ষেত্রে প্রতিদিন নিয়মিত আধা ঘন্টা শরীরে রোদ লাগান। এতে করে আপনারা পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাবেন।
  • ভিটামিন ইঃ সাধারণত ভিটামিন ই চুলের গোড়া মজবুত করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং দ্রুত চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে চুলের ফলিকল কে রক্ষা করে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার গুলো হলো যেমন পালংশাক, এভোকাডো, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, বীজ ইত্যাদি।
  • বি ভিটামিন (বায়োটিন) ঃসাধারণত চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ভিটামিন হচ্ছে বায়োটিন। এটি চুলকে ঘন করতে সহায়তা করে পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে যেমন বিভিন্ন ধরনের শস্যজাতীয় খাবারের প্রচুর পরিমাণে বায়োটিন পাওয়া যায়। এছাড়াও ডিম, বাদাম ইত্যাদিতে বায়োটিন বিদ্যমান থাকে।
  • আয়রনঃ সাধারণত লোহিত রক্ত কণিকার মাধ্যমে অক্সিজেন কে দ্রুত সঞ্চালন করতে আয়রন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আয়রন চুলের গ্রোথ বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান থাকে সবুজ শাকসবজি, মাছ, মাংস, সিম ইত্যাদিতে।
  • জিঙ্কঃ ফলিকলের কার্যকারিতা বজায় রাখতে জিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি চুল পড়া কমায় এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। জিংক সমৃদ্ধ খাবার গুলো হলো বিভিন্ন ধরনের বাদাম, শস্য, মাংস ইত্যাদি।
  • প্রোটিনঃসাধারণত প্রোটিন চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এজন্য চুল ভালো রাখতে প্রত্যেক মানুষের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় মাংস, মাছ, ডিম, দুধ, দুগ্ধ জাতীয় খাবার ইত্যাদিতে।

লেখকের ইতি কথাঃ চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস

সুপ্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস সম্পর্কে পুরোপুরি ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস গুলো ভালোভাবে জেনে নিয়ে সঠিক গাইডলাইন ও নিয়মমাফিক প্রয়োগ করলে, অবশ্যই আপনি আপনার ফুলকে প্রাণবন্ত, স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও সুন্দর রাখতে সক্ষম হবেন। চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস গুলো ভালোভাবে জেনে নিয়ে কতটুকু আপনার

চুলকে সুন্দর স্বাস্থ্য উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত রাখতে সক্ষম হবেন সেটা আপনার সঠিক গাইডলাইন ও নিয়মমাফিক ফর্মুলা প্রয়োগের উপর নির্ভর করছে। সম্ভব হলে একজন ভালো চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিয়ে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। ইনশাআল্লাহ তাহলে দেখবেন অতি শীঘ্রই আপনার চুল শীঘ্রই স্বাস্থ্যজ্জ্বল, সুন্দর, মজবুত ও প্রাণবন্ত হয়ে যাবে।

সম্মানিত পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগের সাথে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরনের তথ্যবহুল ও কার্যকরী আর্টিকেল নিয়মিতই পোস্ট করে থাকি। তাই আপনি যদি এ ধরনের আরও তথ্যবহুল ও উপকারী পোস্ট পড়তে চান, তাহলে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। সাথে সাথে এ আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে আপনার নিকট আত্মীয় বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজনদের কাছে তাদের উপকারার্থে শেয়ার করে দিন। 

যেন তারা চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে পারে। চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় ও চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় ৩০টি টিপস সম্পর্কে আপনার যদি কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকে, তাহলে অবশ্যই নিচে দেয়া মতামত বক্সে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আবার আপনাদের সাথে কথা হবে, নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ ও সুস্থ থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কনফিডেন্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url